• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

রংপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত 

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারি ২০২২  

রংপুর বিভাগে করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে কোনো রোগী মারা যায়নি। শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশে। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ (রেড জোন) হয়ে ওঠা এই বিভাগে দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে বাড়ছে উদ্বেগ ও শঙ্কা।

এর আগের দিন বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিভাগে ৯৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সে দিন শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ২৯ শতাংশ। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিভাগে শনাক্ত হয় ৭২ জন। ওই দিন শনাক্ত ছিল ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তারও আগে সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ৪৯ এবং রোববার (১৬ জানুয়ারি) শনাক্ত হয় ২৫ জন।  বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার ৪৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের ৩৭, রংপুরের ২১, নীলফামারীর ১১, গাইবান্ধার ৮, পঞ্চগড়ের ৪, লালমনিরহাটের ৩, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ এবং কুড়িগ্রাম জেলার ১ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত ২৯ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ৮ রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে নতুন করে ৬৪ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।

একই সময়ে ভারত হতে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ৫, দিনাজপুরের হিলি হয়ে ৬ এবং পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ১৬ জনসহ মোট ২৭ জন দেশে ফিরেছেন।

পরিচালক (স্বাস্থ্য) আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৫ হাজার ৯২ এবং ৩৩২ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭০৯- তে।

এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৯১৩ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৭ হাজার ৭৩৬, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৪৯৮, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৮৪৮, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৬৬০ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৭৮৬ জন।

তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১১ হাজার ৩৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ২৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫২ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৪৩১ জন।

এদিকে, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোনে থাকা রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলায় সংক্রমণে শনাক্তের হার ১০-১২ শতাংশে ওঠা-নামা করছে। এ ছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে থাকা রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলায় শনাক্তের হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে।

রংপুর বিভাগ করোনার সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক। পুরো বিভাগেই সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধের কোনো প্রভাব পড়েনি। এমনকি সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো তৎপরতাও নেই।

বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার কথা থাকলেও হাটবাজার, পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত সবখানেই তা উপেক্ষিত। সুরক্ষা নীতি বা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে চলছে সভা-সমাবেশ, উৎসবসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম চলছে দিব্যি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। তবে বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক।

একই সঙ্গে শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সঙ্গে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি। 

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –