বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় উত্তরাঞ্চলে শুরু হয়েছে নতুন করে চাষাবাদ
– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
দেশ এগিয়ে যাওয়া, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূণতা অর্জনের মূলেই রয়েছেন গ্রামের কৃষক। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, নদীভাঙন যত বারই দুর্যোগে পড়েছেন; পরক্ষণেই স্বউদ্যোগে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।
উজানে ভারত ফারাক্কা বাঁধ ও গজলডোবা বাঁধের সবগুলো কপাট খুলে দেয়ায় বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যায় লাখ লাখ কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল দুমড়ে-মুচড়ে গেছে বানের পানিতে। বানের পানি অনেক জমিতে ফলি ফেলে গেছে। সেগুলো জমির উর্বরতা বাড়াবে। পানি চলে যাওয়ায় কৃষকরা আবার ও কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। বন্যায় বিধ্বস্ত জমিতে আবার ফসল ফলানোর লক্ষ্যে লাঙল-জোয়াল দিয়ে জমি চাষ করছেন; কেউ নতুন ধানের চারা রোপণ করছেন। ধান ছাড়াও কেউ কেউ বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে বাদাম ও সবজি চাষ করছেন। রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, নিলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুরের ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, যমুনা, তিস্তাবদৌত বিস্তীর্ণ এলাকায় একই দৃশ্য। ছোট-বড় সব শ্রেণির কৃষক জমিতে নতুন করে ফসল ফলানোর মহাব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ যেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোনো নগরীকে পুনঃনির্মাণের প্রাণান্তকর চেষ্টা। যুদ্ধে বিধ্বস্ত হলে কোনো শহরকে যেমন নতুন করে গড়তে কর্মযজ্ঞ করতে হয়; কৃষকরা সে রকম চেষ্টাই করছেন। আবার ফসল ফলানোর চেষ্টায় লাখ লাখ কৃষক এখন মাঠে।
বৃষ্টিপাত ও ভারতের ঢল কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হচ্ছে। ফলে কমতে শুরু করেছে ছোটবড় সব নদনদীর পানি। উত্তরাঞ্চলের বড় নদ নদীর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, বাঙালি, করতোয়া এসব নদীর পানি প্রবাহ এখন স্বাভাবিক, বইছে বিপদসীমার নিচে। এতে ধীরে ধীরে জেগে উঠছে বিভিন্ন চরাঞ্চল। জেগে উঠছে নদী তীরবর্তী পলিপড়া ফসলি জমি। আর এরই সাথে নতুন উদ্যোমে জেগে উঠছেন চাষিরা। এক মুহূর্ত অপেক্ষায় না থেকে, সরকারি প্রণোদনার দিকে না তাকিয়ে, তারা লাঙল-জোয়াল কাঁধে নিয়ে কিংবা কলের লাঙল (ট্রাক্টর) নিয়ে নেমে পড়েছেন আবাদি জমিতে। রীতিমত শুরু হয়েছে চাষাবাদের ধুম।
বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমিতে আবারও ধানের চারা লাগাচ্ছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। প্রস্তুত করছেন জমি। তৈরি করা হচ্ছে বীজতলা। অনেকে আবার আগাম জাতের সবজি চাষ করছেন। বলা যায় বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন আশা ও উদ্দীপনায় কৃষকরা চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
এ বছরও ১৫ দিনের বেশি সময় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল দেশের ১৫টি জেলার বিস্তৃীর্ণ অঞ্চল। এতে আমন ধান ও বিভিন্ন সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে বন্যা যেমন ক্ষতি করে, তেমনি তা কৃষকের জন্য অনেকটা আশীর্বাদও বয়ে নিয়ে আসে। কৃষিবিদের মতে, বন্যার পানিতে ভেসে আসা পলিতে জমির উর্ব্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। এতে পরবর্তী ফলন অনেক ভালো হয়।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. এম আবদুল করিম এ বিষয়ে বলেন, দেখা গেছে, যে বছর বন্যার প্রকোপ বেশি হয়, সে বছর রবি মৌসুমের (শীতকালীন) ফসলের ফলন ভালো হয়। এর কারণ হলো বন্যার মাত্রা বেশি হলে হিমালয় থেকে আসা পলির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। এসব পলিতে গাছের বিভিন্ন প্রকার খাদ্যোপাদান থাকে। তাছাড়া বর্ষায় যেসব জমির আমন ধান বিনষ্ট হয়, সেসব জমিতে কৃষক সঠিক সময়ে অর্থাৎ অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরের প্রথমেই রবিশস্য যেমনÑ গম, ডাল ও তেল জাতীয় ফসল ইত্যাদির চাষ করতে পারে। এ ছাড়া আগাম সবজি চাষেও ভালো ফলন হয়। এতে কৃষক অনেক লাভবান হয়। আবার আগস্ট মাসের পর সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে বন্যার পানি নেমে গেলে আমন ধান নষ্ট হলেও পলি পরা জমিতে নতুন ভাবে চারা রোপণ করে কৃষক বাম্পার ফলন পান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের কুড়িগাম, নীলফামারি থেকে শুরু করে গাইবান্ধা, বগুড়া হয়ে সিরাজগঞ্জের নলকা পর্যন্ত এলকায় ব্রহ্মপুত্র যমুনা অববাহিকায় পলি পড়া নিচু জমিতে লাগানো হচ্ছে রোপা আমন, গাইঞ্জা এবং বোনা আমন প্রজাতির ধান। এ ছাড়া অনেকে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষও শুরু করেছেন।
তিস্তা-ধরলার জেগে ওঠা চরে লাগানো হচ্ছে শীত মৌসুমের আগাম জাতের সবজি ও বাদাম। পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চলনবিল এলাকায় বন্যা সহায়ক বিশেষ প্রজাতির ধান চাষ হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। এই ধানের বৈশিষ্ট্য হলো কোন কারণে জমিতে পানি প্রবেশ করলে পানি যত বাড়ে পানির সাথে পাল্লা দিয়ে ধানের গাছও ততো বাড়ে। ফলে চাষিদের বন্যা নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করতে হয় না। চলন বিল অঞ্চলের চাষিরা প্রায় দেড় দশক ধরে আমন, আউশ ও বোরো মৌশুমে ধান উৎপাদনে বিরাট ভূমিকা রাখছে।
চলতি বছরে সিংড়া অঞ্চলে কিছু এনজিওর পৃষ্ঠপোষকতায় চাষিরা গ্রিন হাউজ তৈরি করে সারা বছর শীতকালীন সবজি টমেটো, গাজর, কফি ইত্যাদি উৎপাদন করছেন। নাটোরের সিংড়া এবং বগুড়ার নন্দীগ্রামের অংশবিশেষে বর্তমানে বন্যা পরবর্তী ফসল উৎপাদনে অসাধারণ অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে।
গত (শনিবার) বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ি, ভান্ডার বাড়ি গ্রামে যমুনা তীরের প্রান্তিক চাষি জিয়াউল আলম জানান, পানি নাইমা গেছেগা, তাই দেরি করিন্যাই , মাসকালাই ব্যুনা দিসি। বাকিডা আল্লাহ ভরসা। সরকারি কৃষি প্রণোদনার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, ইউনিয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেম্বার নাম তো লিস্টি করসে। কিসুতো পামু। কিন্তু কবে পামু সেই আশায় সময় নস্ট কর্যা লাভ কি?’
প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবং চাষি পর্যায়ে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কেউই আর ফসল চাষে সময় ক্ষেপণ করতে রাজি নয়। বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট উপজেলা প্রশাসনে খবর নিয়ে জানা গেছে, বন্যা পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে চাষিরা যাতে নতুন করে আমনসহ মৌসুমি ফসল ও আগাম শীতকালীন সবজি চাষে মনোযোগী হতে পারে তার সব ব্যবস্থাই রয়েছে।
বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একটি হিসেবে দেখা গেছে, এখন প্রতিবছর বগুড়ার যমুনার চরাঞ্চলেই প্রতিবছর ৮শ’ কোটি টাকার পাট, আখ, ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, বাদাম, কাউন ও মরিচের উৎপাদন হয়। এর অর্ধেকই হয় মূলত বন্যা পরবর্তী শরৎকালীন সময়ে। কৃষি বিভাগের মতে, এক দশক আগেও এই অঞ্চলে কৃষির এই চিত্র ছিল না। অতীতে দেখা গেছে, চাষিরা বন্যা পরবর্তী সময়ে কৃষি প্রণোদনার অর্থ ও ফসলের বীজ জমিতে না লাগিয়ে অলস সময় পার করত। এখন বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে উৎপাদিত ফসল সারাে দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকায় চাষিরা এখন প্রণোদনার আশায় বসে থাকে না। তারা সবসময় আগাম চিন্তা করে যেকোনো মৌসুমি ফসলের আগাম উৎপাদনে আগ্রহী হয় বেশি বলে জানায় বগুড়ার কৃষি বিভাগ।
বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, চলতি বছর আর কোনো বন্যার সতর্কবার্তা নেই। গরমের কারণে হিমালয়ে বরফগলা পানির প্রবাহ বা শরতের শেষে দুয়েক দফা ভারী বর্ষণ হলেও ফসলহানির মতো বন্যার আশঙ্কা আর তেমন নেই। এটা উত্তরের কৃষির জন্য সুখবর বলেই তারা মনে করছেন।
– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- ঢাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসা করতে এসে পীরগঞ্জে আটক
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- গাজার সেই শহরে আবারও নারকীয় হামলার ঘোষণা ইসরায়েলের
- পাটপণ্যের উন্নয়নে সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে: পাটমন্ত্রী
- বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে আরো উদ্যোগী হতে হবে: প্রতিমন্ত্রী শফিকুর
- সংগত কারণ ছাড়া প্রকল্পের ধীরগতি মানা হবে না: রেলমন্ত্রী
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- ‘ঈদের আগেই মুক্ত করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে’
- ঈদে স্বপ্ন বাড়ি যায়নি বেরোবি শিক্ষার্থী আফ্রিদির, ফিরবে লাশ হয়ে
- সূচকের উত্থানে পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- পুলিশের পা ধরে কাঁদলেন মায়ের ওষুধ কিনতে যাওয়া যুবক, অতঃপর...
- ভারতের নির্বাচনের পর দিল্লি সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
- ৪-৫ দিনের মধ্যেই যানজট থেকে মুক্তি পাবে ঢাকাবাসী
- মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে: গণপূর্তমন্ত্রী
- মে মাসে ৪৪ ডিগ্রি পৌঁছাবে তাপমাত্রা
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- গাজায় মৃত্যু ৩৩ হাজার ছাড়াল, ঘণ্টায় ৪ শিশু মৃত্যু
- তুরস্কে আঞ্চলিক নির্বাচনে এরদোগান বিরোধীদের জয়
- শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে কাজ করবো: শ্রম প্রতিমন্ত্রী
- ভূমিহীনদের ভূমি অধিকারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
- ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে’
- ‘নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত’
- মিয়ানমারের ১৭৯ সেনাকে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ