• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আমার মতো যেন বিচারহীনতায় ভুগতে না হয়: জননেত্রী শেখ হাসিনা       

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০২১  

‘৮১ সালে দেশে ফিরে হাই কোর্ট ভবনে বহুবার গেছি। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। আমরা বিচার চাইতে পারিনি... আমাদের মতো যেন কাউকে বিচারহীনতায় ভুগতে না হয়।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার পেতে পদে পদে বাধা ও আইনি জটিলতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার মতো যেন কাউকে বিচারহীনতায় ভুগতে না হয়। গত বুধবার ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ভবনের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন সরকার প্রধান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

বাবা হত্যার বিচার না পাওয়ার আক্ষেপের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘৮১ সালে দেশে ফিরে হাই কোর্ট ভবনে বহুবার গেছি। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। আমরা বিচার চাইতে পারিনি... আমাদের মতো যেন কাউকে বিচারহীনতায় ভুগতে না হয়।’

১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসা সরকার খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে জিয়াউর রহমানের সরকার সেটি সংসদে অনুমোদন করে। ফলে খুনিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই অধ্যাদেশ বাতিল করে বিচার শুরু করে। বিচারিক আদালত থেকে রায় এলেও উচ্চ আদালতে আটকে যায় বিচার। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আর শুনানি হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে বিচারের পথ খোলে আবার।

হত্যার ২৫ বছর পর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি পাঁচ খুনির ও গত ৫ মে মধ্যরাতে আরেক খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়। তবে এখনও পাঁচ খুনি বিদেশে পলাতক। এর একজন কানাডায়, একজন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৯০৮টি মামলা বিচারাধীন জানিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানান সরকার প্রধান। বলেন, ‘মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুত সময়ে রায় দিতে সকল বিচারক ও আইনজীবীকে অনুরোধ করছি। এত মামলা যেন জমে না থাকে।’

বিচারকদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিচার পাওয়া সকলের অধিকার। দ্রুত সময়ে, অল্প খরচে বিচারকাজ শেষ করলে বিচার বিভাগের ওপরই মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়বে। যদিও আমাদের সকলেরই আস্থা-বিশ্বাস আছে, তারপরেও আমি এ বিষয়ে সবাইকে একটু বিশেষ নজর দিতে বলব।’

দ্রুত বিচারে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এতগুলো মামলা এভাবে পড়ে থাকুক সেটা আমরা চাই না।’

রায় বাংলায় লেখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইংরেজিতে হওয়ায় অনেকে সে রায় বুঝতে পারে না। ইংরেজির সঙ্গে বাংলায় অনুবাদ করে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

এ জন্য অনুবাদক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী। জানান, এক্ষেত্রে সরকার আর্থিক সহায়তা করবে।

বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা করার বিষয়টি তুলে ধরেন। বলেন, ‘অধ্যাদেশটি কেবিনেটে পাস হয়েছে। সংসদ অধিবেশনে বসলেই আইন হিসেবে পাস হবে।’

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন আইন মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘দেশে জনগণের অনুপাতে বিচারকের সংখ্যা কম হওয়ায় তা পূরণ করতে কাজ করা হচ্ছে ‘

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। জেলা জজশিপের বিচারক ও মহানগর জজশিপের বিচারকসহ সব ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনজীবীরাও এতে উপস্থিত ছিলেন।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –