• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

১২ দিনে রংপুরজুড়ে শনাক্ত ১৭৫৬, মৃত্যু ২

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২২  

রংপুর বিভাগজুড়ে গত ১২ দিনে ১ হাজার ৭৫৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনা আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। এটি করোনা সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এর আগের দিন বিভাগে শনাক্ত হয়েছিল ৩৫৯ জন।

প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার সঙ্গে বাড়ছে শনাক্তের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে শনাক্তের হার গিয়ে ঠেকেছে ৪৫ শতাংশে। এর আগের দিন শনাক্তের হার ছিল ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর বিভাগের গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলায় সংক্রমণ ৫৫ শতাংশের ওপরে।

বাকি ছয় জেলার মধ্যে দিনাজপুরে সংক্রমণের হার ৪৫ দশমিক ২৯, পঞ্চগড়ে ৪৪ দশমিক ৮৯, লালমনিরহাটে ৪৪ দশমিক ২৩, রংপুরে ৪৩ দশমিক ৫৩, কুড়িগ্রামে ৩৫ দশমিক ৪৮ এবং নীলফামারীতে ২৯ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম।

বিভাগীয় পরিচালক জাকিরুল ইসলাম জানান, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার ৮৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে  রংপুরের ১০১, দিনাজপুরের ৯৬,  ঠাকুরগাঁওয়ের ৫৮, গাইবান্ধার ৩৮, নীলফামারীর ২৯, লালমনিরহাটের ২৩, পঞ্চগড়ের ২২ এবং কুড়িগ্রাম জেলার ১১ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৪ জন। এ সময়ে রংপুর জেলার একজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে বিভাগে করোনা আক্রান্ত গুরুতর ৪৪ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সংকটাপন্ন ১৪ রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাসায় রেখে চিকিৎসা চলছে। বিভাগজুড়ে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ রয়েছেন ৩ হাজার ২২৮ জন রোগী।

পরিচালক আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৫ হাজার ৫৮৩ এবং ৩৩৩ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১০৮-তে।

এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৭ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৭ হাজার ৯৬৪, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৬৮৮, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৯৫১, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৭১১ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৮৭১ জন।

তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭ হাজার ৯১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫৪ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৮৫ জন।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট জেলাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বা রেড জোন বলা হয়েছে। এ ছাড়া ইয়েলো জোন বা মধ্যম ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলা। দিন দিন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে ভারতের কোলঘেঁষা এই বিভাগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর।

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় রংপুরে গঠিত নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, সচেতনতার অভাব থেকেই মানুষজন এখনো পুরোপুরি টিকা গ্রহণ করেনি। বেশির ভাগ এখনো মুখে মাস্ক ব্যবহার করছে না। এই পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত। নির্দেশনা মানাতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হওয়া জরুরি। নয়তো সাধারণ মানুষদের দায়িত্বহীন কাণ্ডে বিপর্যয় ঘটবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক। তবে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করতে মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে মাস্ক সরবরাহ করা অব্যাহত আছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –