• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আশ্রয়হীনদের জীবন বদলে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে     

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের সেই বিখ্যাত উক্তি ‘আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও / রহিমুদ্দীর ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও। / বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি / একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি’। কবির সেই আসমানীরা এখন নিজের ঠিকানা পেয়ে স্বাবলম্ভি হতে শুরু করেছেন। সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের জীবন-মানের এই পরিবর্তম শুরু হয়েছে ফরিদপুরে।

সরেজমিনে আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, সময়ের সাথে এখন বদলেছে ছিন্নমূল মানুষের যাপিত জীবনের। কবির ওই ভেন্না পাতার ছাউনী থেকে তারা এখন বসবাস করছে রঙ্গিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতেই করছে শাক-সবজির আবাদ। কেউবা করছে হাঁস-মুরগি, ছাগল ও গরু পালন। সন্তানদের পাঠাচ্ছে স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। বসবাসের জন্য সরকারের দেওয়া এই সুবিধাটি পেয়ে খুশি আশ্রয়হীন মানুষগুলো।

আশ্রয়ণ প্রকল্পকের বাসিন্দারা গঠন করেছে সমবায় সমিতি, নিয়মিত নিচ্ছে প্রশিক্ষণ, অনেকের একাডেমিক শিক্ষা না থাকলেও নানা প্রশিক্ষণে তারা হয়ে উঠছে স্বশিক্ষিত। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত তদারকিতে ক্রমেই সময়ের সাথে সাথে উন্নয়নের নানা দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জেলায় হতদরিদ্র যাদের বসবাসের কোন ঠিকানা ছিলো না, তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। এটা সত্যিই বিষ্ময়কর। ওই মানুষগুলো তাদের ভাগ্যে চাকা নতুন ভাবে ঘুরাতে শুরু করেছে।

ফরিদপুর জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তামলিমা আলি জানান, তৃতীয় দফায় সব মিলেয়ে প্রায় ৫ হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ভূমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে। কিছু কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্ব্যয়ে যোগ্যদের চিহ্নত করে ঘর দেয়া হয়েছে।

বদলে যাওয়া আশ্রয়হীন ছবেদা বেগম, লতিফা আক্তার, হাফিজুর রহমানসহ আরো অনেকেই বলেন, ‘কিছু দিন আগেও ভাবিনী নিজের ভাল একটা বসবাসের ঠিকা হবে, এখন সেটি হয়েছে, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছি, নিজের হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সত্যই এটা স্বপ্নের। এমনটি হবে ভাবিনি, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার জন্য দোয়া করি। তিনি যেন আমাদের দিকে আরো তাকান। আমাদের জন্য আরো কিছু করেদেন।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও নগরকান্দার জেতী প্রু জানান, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে, আমরা সরকারে পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি, এই প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোল মডেল, কারণ এভাবে কোরো দেশে অশ্রয়হীনদের জন্য সরকারিভাবে নিরাপদ ছাদ তৈরির ব্যবস্থা করা হয়নি।’

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছি। ফরিদপুরে আমরা আশ্রয়ন প্রকল্প সংলগ্ন বেশ কয়েকটি স্থানে শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের বাসিন্দাদের স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ এবং ঋণেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা চাই ছিন্নমূল মানুষগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখুক।’

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –