• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বাংলাদেশ প্রচুর বৈদেশিক রিজার্ভ আলাদা করেছে: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২২  

বাংলাদেশ ভালভাবে ঋণ ব্যবস্থাপনা করছে এবং কোভিড ধাক্কা সামলানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক রিজার্ভ আলাদা করেছে। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস মঙ্গলবার (১০মে)বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বিজনেস ফোরামে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি গত এক দশকে বিশ্বের দ্রুততম সময়ে বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দেশের জিডিপি কোভিড লকডাউনের সময়েও বেড়েছে এবং অর্থনীতি এই বছর ৬.৯ শতাংশ এবং পরের বছর ৭.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই আরো ভালভাবে জানতে হবে যে তাদের জন্য বাংলাদেশে কী ধরনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে চায় তাহলে নিদ্বির্ধায় বলা যায় তারা সেখানেই ব্যবসা করতে যাবে যেখানকার বাজার তারা বোঝে। বাংলাদেশে একটি বিশাল এবং ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত -শ্রেণির জনসংখ্যা রয়েছে। ১৯৭১ সালে পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর কাতারে থাকা বাংলাদেশের ২০২৬ সালে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটবে। বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি এখন ভারতের তুলনায় বেশি। এবং ১৬ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে দেশটি এখন বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ, যেখানে যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি এবং কানাডার চেয়ে চারগুণ বেশি জনসংখ্যা রয়েছে। যে কোন কোম্পানি এখন বাংলাদেশে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারলে তাদের জন্য প্রজন্মান্তরে বিনিয়োগের লাভ ফেরত পাওয়া নিশ্চিত।

বিদেশে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক একটি কোম্পানি অবশ্যই সেই দেশে একটি উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ ও পানিতে সহজে প্রবেশগম্যতা এবং সু-প্রশিক্ষিত জনবল দেখতে চায়। এই চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু একটি কোম্পানি নিশ্চয়তাও চায়। তারা যেখানে বিনিয়োগ করবে সেখানে সহজবোধ্য নীতি কাঠামো দেখতে চায় এবং তারা আইনের অব্যাহত প্রয়োগ দেখতে চায়। একটি কোম্পানি তার মেধাসম্পদের সুরক্ষার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আস্থা পেতে চায়। এছাড়াও তারা এটাও জানতে চায় যে, যদি কোন ধরনের বিরোধ তৈরি হয় তাহলে তারা আদালতের শরনাপন্ন হতে পারবে এবং আদালত কালবিলম্ব না করে দ্রুততার সাথে ও ন্যায্যতার সাথে বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবে। এই প্রশ্নগুলোর ভিত্তিতে বাংলাদেশ তার প্রতিযোগীদের তুলনায় কেমন?

বাংলাদেশ কি সততার সাথে একথা বলতে পারে যে, একটি (পণ্যবাহী) কনটেইনার বাজারে পাঠানোর ক্ষেত্রে দেশটি যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ও যতোটা সময় নেয় তা অন্য দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতামূলক?

বাংলাদেশ কি একথা বলতে পারে যে, প্রস্তাবিত বিধানগুলোর প্রভাব সম্পর্কে বাংলাদেশ পুরোপুরি বুঝতে পারে? উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কী বুঝতে পারে তাদের অনলাইন বিষয়বস্তু পরিচালনা সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইন ডিজিটাল ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার বিষয়টিকে পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করবে?

বাংলাদেশ কী বিনিয়োগকারীদের এই নিশ্চয়তা দিতে পারে যে এখানের ব্যবসা স্থাপন প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছতার সাথে করা হয়?

বাংলাদেশ কী একথা বলতে পারে যে এখানে পর্যাপ্ত আইনী কাঠামো রয়েছে যার অধীনে ব্যবসাগুলো পরিচালিত হবে? যখন (আমরা দেখি যে) মামলার শুনানির সময় পেতেই এখানে কয়েক বছর সময় লেগে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বাংলাদেশে ব্যবসা শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমেরিকান কোম্পানিগুলো নিজেদের মতো করে খুঁজবে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –