• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

ঠাকুরগাঁওয়ের সেই ফজিলা এখন সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২২  

স্বামীর দ্বিতীয় সংসারের পর অশান্তি নেমে আসে ফজিলার সংসারে। পরে জীবন সংসারে অশান্তি ক্রম্বানয়ে বাড়তে থাকে তার। স্বামী মারা যাওয়ার পর জানতে পারেন, ভিটেমাটি দলিল করে দিয়েছেন দ্বিতীয় সংসারের সন্তানদের। পরে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে চলে আসেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের পটুয়া ফকদনপুর গ্রামে ভাইয়ের বাড়িতে। সেখানেই কোনো রকমে মাথা গোঁজার একটু জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। 

জরাজীর্ণ ঘর, চারদিকের বেড়া ভাঙা। বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে ভেতরের সবকিছু। ঘরের ভেতরে একটি চৌকি। জ্বলছে ল্যাম্পের বাতি। নেই বিদ্যুতের আলো। খড়ি, হাড়ি-পাতিল আর কিছু পুরোনো কাপড় চোপড় নিয়ে ছেলেসহ এক ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন বৃদ্ধা ফজিলা খাতুন।

ফজিলা খাতুনের এ মানবেতর জীবনযাপন তুলে ধরে গত ১৬ মার্চ "ছেলের ঘর দেখে মরতে চান বৃদ্ধা ফজিলা’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে ভিডিওসহ একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে সেটি নজরে আসে সদর উপজেলা প্রশাসনের। সেই প্রেক্ষিতে (৩০ মার্চ) বুধবার বিকেলে ফজিলা খাতুনকে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের একটি ঘর দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান।

ঘর পাওয়ার পর বৃদ্ধা ফজিলা বলেন, মুই জীবনে কল্পনাও করুনি যে নয়া ঘর হবে। তাও আবার ইটের ঘর। এই রকম দিন দেখিম এইডা এলাও মোর স্বপ্ন মনে হচে। খবর প্রকাশ না হইলে বুঝি ঘর পাওয়া হলেহেনি মোর। আইজকা ইউএনও স্যার নতুন ঘরের চাবি দিল। এলা থেকে মুই নিজের ঘরত থাকিবা পারিম। ছেলেডার বিহা দেওয়া যাবে। সরকারি ঘর বিনা পয়সাত পাহেনে আইজকা মুই খুব খুশি। এলা আর চলে যাবার তাহানে কেউ রাগ আর ধমক দিবেনি। এলা শান্তিতে থাকিবা পারিম আর ঘুমাবা পারিম। মোক যে ঘর দিলেন আল্লাহ তোমার ভালো করিবে।

স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন আমিরুল ইসলাম বলেন, ফজিলা সম্পর্কে আমার প্রতিবেশী বোন হবে। তার স্বামী মারা যাওয়ার সে তার ভাইয়ের জায়গায় খুব কষ্ট করে থাকত। তার ভাই প্রায় তাকে জমি ছেড়ে যাওয়ার জন্য বলত। আজকে ইউএনও মহোদয় নতুন ঘর তুলে দিলেন। আমরা স্থানীয় প্রশাসন, ইউএনওসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই এমন মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান বলেন, রহিমানপুর ইউনিয়নের ফকদনপুর গ্রামে ভাইয়ের জমিতে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন ফজিলা খাতুন। তার মানবেতর জীবন নিয়ে ঢাকা পোস্ট একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারি তিনি ভূমিহীন। আজকে তার হাতে মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তুলে দেওয়া হল।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –