• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধে ক্ষুব্ধ খালেদা

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২১  

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার প্রধান নিরাপত্তা সমন্বয়কারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদসহ তিন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ দেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে চেইন অব কমান্ড ভঙ্গের পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে কেউ এর সত্যতা স্বীকার না করলেও গত ২ জুন থেকে ওই তিন কর্মকর্তা বিএনপি প্রধানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নেই বলে দলীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানিয়েছে। অন্য দুই কর্মকর্তা হলেন- মেজর (অব.) ওয়াজেদ এবং মেজর (অব.) মোহাম্মদ আনোয়ার।

জানা গেছে, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর (অব.) আজিজ রানাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদের স্থানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র মতে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছেন। ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদ। তার বিশাল বলয়ও তৈরি হয়েছে। এ কারণে গুলশান কার্যালয়ে যাতায়াত কমিয়ে দিয়েছেন ফজলে এলাহী আকবর। তবে তিন কর্মকর্তার অব্যাহতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

বিএনপি চেয়ারপার্সনের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ফজলে এলাহী অনিয়মিত হওয়ায় বেগম জিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ দেখা দেয়। 

সাতজন কর্মকর্তার মধ্যে অব্যাহতি দেওয়া তিন জন একপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যপক্ষে রয়েছেন আজিজ রানা, মেজর (অব.) সাফায়াত উল্লাহ, মেজর (অব.) মইনুল হোসেন ও লেফটেন্যান্ট (অব.) সামিউল।

এছাড়া ১৬ জন সিএসএফ সদস্যকেও তারা যার যার গ্রুপে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি বিএনপি চেয়ারপার্সনের কানেও যায়। এতে ক্ষুব্ধ হন তিনি। এরপরই ওই তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুলশান কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদ এতটাই প্রভাবশালী হয়ে উঠেছিলেন যে, তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাকে ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন ‘অচল’ এমনটাই মনে করতেন। লক্ষ্মীপুরে দলীয় এক কর্মীকে হত্যা মামলার আসামি হয়েও তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রধান নিরাপত্তা সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও কেউ ভয়ে কিছু বলার সাহস পায়নি।

জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এমপি নির্বাচন করার জন্য আলাদা একটি বলয় তৈরি করেছেন মজিদ। পোস্টার, ব্যানার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে রাজনৈতিক নেতার মতো তুলে ধরেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রভাবশালী এক উপদেষ্টার মদদে গুলশান কার্যালয়ে তিনি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

বেশ কয়েকদিন ধরে ব্যক্তিগত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মেজর (অব.) ওয়াজেদ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। গত ২ জুন থেকে মৌখিক ছুটিতে গেছেন মেজর (অব.) আনোয়ার। তবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদ কাউকে বলে গেছেন কিনা কেউ জানেন না।

মেজর (অব.) আনোয়ার জানান, তিনি তার মা ও নিজের অসুস্থতার জন্য ছুটি নিয়েছেন। সুস্থ হলেই কাজে যোগ দেবেন। অন্যদিকে মেজর (অব.) ওয়াজেদের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। 

এ প্রসঙ্গে বর্তমান চেয়ারপার্সনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর (অব.) আজিজ রানা বলেন, মেজর (অব.) ওয়াজেদ বেশ কয়েকদিন ধরে ব্যক্তিগত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ছুটিতে গেছেন। মেজর (অব.) আনোয়ারও এক সপ্তাহের ছুটিতে গেছেন। তবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মজিদ সম্পর্কে কিছু জানি না।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –