• মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩ ১৪৩১

  • || ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাহান্নামের ছায়া ধোঁয়া ও উত্তাপ

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১  

জাহান্নামের আগুনের তীব্র তাপদাহ ও উষ্ণতা অত্যন্ত প্রখর হবে। সেখানে আছে আগুন থেকে প্রস্তুতকৃত পোশাক, বিছানা, ছায়া, ভারী বেড়ি এবং আগুনের জিঞ্জির, আগুনে উত্তপ্ত ও প্রজ্বলিত কোটি কোটি টন ভারী লোহা ও গুর্জ, আগুনে উত্তপ্ত করা আসন প্রভৃতি। আর যার সৃষ্টি লেলিহান অগ্নিশিখা হবে, তার অভ্যন্তরস্থ বায়ুর ধ্বংসলীলা কত ভয়ংকর হতে পারে—তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর বাম দিকের দল কত হতভাগ্য, বাম দিকের দল! তারা থাকবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে, কৃষ্ণবর্ণের ধূম্রের ছায়ায়, যা শীতলও নয়, আবার আরামদায়কও নয়।’ (সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত : ৪১-৪৪)

জাহান্নামিরা জাহান্নামের আজাবে অতিষ্ঠ হয়ে এক ছায়াকর বৃক্ষের দিকে ছুটে আসবে। যখন সেখানে পৌঁছবে তখন বুঝতে পারবে যে এটা কোনো ছায়াদানকারী বৃক্ষ নয়; বরং এটা জাহান্নামের ঘনকালো ধোঁয়া। জাহান্নামের ছায়ার বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যাকে অস্বীকার করতে, চলো তার দিকে। চলো তিন শাখাবিশিষ্ট ছায়ার দিকে, যে ছায়া শীতল নয় এবং যে ছায়া অগ্নিশিখা থেকে রক্ষা করতে পারে না। তা উৎক্ষপণ করবে অট্টালিকাতুল্য বৃহৎ স্ফুলিঙ্গ, তা পীতবর্ণ উষ্ট্রশ্রেণিসদৃশ। সেই দিন দুর্ভোগ মিথ্যারোপকারীদের জন্য।’ (সুরা মুরসালাত, আয়াত : ২৯-৩৪)

জাহান্নামের অগ্নিবায়ুর উষ্ণতা এত প্রখর, যা সব জাহান্নামিকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেবে। যে আগুন মানুষকে জীবিত থাকতেও দেবে না, আবার মরতেও দেবে না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি কি জানো সাকার কী? তা (মানুষকে) অক্ষতও রাখবে না, আবার ছেড়েও দেবে না। মানুষকে দগ্ধ করবে।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ২৭-২৯)

এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, ‘কখনো না। সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে। আপনি কি জানেন পিষ্টকারী কী? এটা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন, যা হৃদয়ে পৌঁছবে। এতে তাদের বেঁধে দেওয়া হবে লম্বা লম্বা খুঁটিতে।’ (সুরা হুমাজা, আয়াত : ৪-৯)

জাহান্নামের আগুন অনবরত প্রজ্বালন করা হবে। তাপ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার জ্বালানো হবে। তা কখনো নির্বাপিত হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যার (নেকির) পাল্লা হালকা হবে তার স্থান হবে হাবিয়া। আপনি কি জানেন হাবিয়া কী? তা হলো জ্বলন্ত আগুন।’ (সুরা কারিয়া, আয়াত : ৮-১১)

গ্রীষ্মকালে গরমের তীব্রতা জাহান্নামের আগুনের উষ্ণ বাষ্পের কারণেই হয়ে থাকে এবং জ্বরও জাহান্নামের আগুনের একটি অংশ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যখন গরম বৃদ্ধি পায় তখন সালাত (বিলম্বে আদায়ের) মাধ্যমে তা ঠাণ্ডা করো। কারণ গরমের তীব্রতা জাহান্নামের নিঃশ্বাসের কারণে হয়। আর জাহান্নাম আল্লাহর কাছে অভিযোগ করল যে হে আমার রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে (অতএব আমাকে নিঃশ্বাস ত্যাগের অনুমতি দিন)। অতঃপর আল্লাহ তাকে বছরে দুবার নিঃশ্বাস ত্যাগের অনুমতি দেন। একটি শীতকালে আর অন্যটি গ্রীষ্মকালে। তোমরা গ্রীষ্মকালে যে কঠিন গরম অনুভব করো, তা এ নিঃশ্বাস ত্যাগের কারণে আর শীতকালে যে কঠিন শীত অনুভব করো, তাও ওই নিঃশ্বাস ত্যাগের কারণে হয়ে থাকে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৬-৫৩৭)

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –