• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

কোরবানি না করে সেই টাকা দান করা যাবে?

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২২  

কোরবানি ইসলামের অন্যতম নিদর্শন। এটি ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাই কারো ওপর কোরবানি ওয়াজিব হলে যেকোনো উপায়ে তা করার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। মহামারি কিংবা দুর্যোগের কারণে কোরবানি করা থেকে বিরত থাকা যাবে না।

এমনকি মহামারি, দুর্যোগ ইত্যাদির অজুহাতে কোরবানি না করে সে টাকা দান করে দিলেও কোরবানি আদায় হবে না। সামর্থ্যবানের জন্য কোরবানি করা আবশ্যক। সামর্থ্যের পরও কেউ কোরবানি না করলে হাদিসে তার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্যের পরও কোরবানি দেয় না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১২৩)
 
একজন স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, মুসলিম যদি ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক থাকেন, তাদের পক্ষ থেকে একটি কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। ইসলামে ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত হচ্ছে কোরবানি। আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় আত্মোৎসর্গ করাকে বলা হয় কোরবানি। তাৎপর্যমণ্ডিত আমল এটি।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে একবার দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। ওই বছরও তিনি কোরবানি না করে দান-সদকা করতে বলেননি; বরং ওই বছর কোরবানি করে গোশত তিন দিনের বেশি সংরক্ষণ করতে নিষেধ করেছিলেন। যদিও পরের বছর দুর্ভিক্ষ না থাকায় সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৫৬৯, মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৪)

আর কোরবানির সঙ্গে প্রাণ বিসর্জনের সম্পর্ক আছে, এটি অর্থের মাধ্যমে সম্ভব নয়। কোরবানি পৃথক ইবাদত, আর দান-সদকা পৃথক ইবাদত। একটি অন্যটির পরিপূরক নয়।

কোরআন সুন্নাহর দিকনির্দেশনার ভিত্তিতে প্রায় সব ওলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে একমত যে, সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানির পশু জবাই করাই ওয়াজিব। একান্তই কেউ যদি নির্ধারিত তিন দিন (১০, ১১ ও ১২ জ্বিলহজ) কোনো কারণবশত কোরবানি করতে না পারে তবে কোরবানির দিনগুলো চলে যাওয়ার পর একটি বকরির মূল্য সদকা করা ওয়াজিব।

হজরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে কোরবানি (পশু জবাই) করেছেন।

ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদত ও বিধান। এটি পালন করতে হয় নির্দিষ্ট সময় ১০ থেকে ১২ জ্বিলহজের মধ্যে। এটা ওয়াজিব বিধান ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُم مِّن بَهِيمَةِ الْأَنْعَامِ فَإِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَلَهُ أَسْلِمُوا وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِينَ

‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেওয়া চতুস্পদ জন্তু জবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তারই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩৪)

রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোরবানি জিনিসটা কী? জবাবে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটা হচ্ছে তোমাদের পিতা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।’

এ গুরুত্বপূর্ণ বিধানটি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের জন্য জ্বিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই তিন দিন পালন করা ওয়াজিব।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –