• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

টি-২০ বিশ্বকাপের ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারে বাংলাদেশ

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ অক্টোবর ২০২১  

সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে বসবে টি-২০ বিশ্বকাপের এবারের আসর। ভারত মূল আয়োজক হলেও দেশটিতে করোনার কারণে ভেন্যু হিসেবে আরব আমিরাত ও ওমানের ভেন্যুগুলো ব্যবহার করা হবে।  

আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে অংশ নিতে এরই মধ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গত ছয়টি আসরে বাংলাদেশ খুব একটা ভাল না করতে পারলেও এবারের টুর্নামেন্টের ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারে টাইগাররা।

সম্প্রতি ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় সত্ত্বেও আসন্ন টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ দু’টি সিরিজেই উইকেট ধীর গতির হওয়ায় ম্যাচগুলো ছিল লো-স্কোরিং। ব্যাটাররা বড় ইনিংস খেলতেই পারেননি। তবে সর্বশেষ দুই সিরিজের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ থাকছে টাইগারদের। 
আসন্ন এই বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ ‘ডার্ক হর্স’ হতে পারে, কিন্তু কেন?

আগামী ১৭ অক্টোবর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ দল। দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালকে ছাড়াই এই আসরে খেলতে হবে টাইগারদের। প্রথম পর্ব পেরেয়ে সুপার টুয়েলভে যাওয়ার জন্য ভালো অবস্থায় আছে টাইগাররা।

সাম্প্রতিক ফর্ম যোগাতে পারে আত্মবিশ্বাস:

দিন শেষে যেকোনো ফরম্যাটে এবং যেকোনো কন্ডিশনে জয়, বিশেষভাবে আইসিসির মত বড় টুনার্মেন্টে দলের মনোবল ও সাহস বাড়াতে সহায়তা করে। যেকোনো পরিস্থিতিতে জয়ের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সাফল্যকে ২০০৭ দলের সঙ্গে তুলনা করেছেন সাকিব। যদিও ২০০৭ সালের টুনার্মেন্টের আগে তাদের জয়গুলো কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এসেছিল। তারপরও সেই সব জয় বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিলো। জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপে ইতিহাস লিখেছিলো টাইগাররা। ত্রিনিদাদে সেবার ভারতকে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। সুপার এইটে বাঘের থাবায় কুপোকাত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
অনেক বোলিং অলরাউন্ডার দলে ভারাসাম্য সৃষ্টি করেছে:

বাংলাদেশের একটি ভালো বোলিং অ্যাটাক রয়েছে। এর মধ্যে শক্তিশালী স্পিন অ্যাটাক আছে, যারা ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারে।

গেল বছর এই ফরম্যাটে দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ ১৪টি করে উইকেট নিয়েছেন এবং কমপক্ষে ১০০ রান করেছেন। একই সময়ে এই ফরম্যাটে দক্ষিণ আফ্রিকার জর্জ লিন্ডে বেশি উইকেট নিয়েছেন এবং অন্তত ১০০ রান করেছেন। গেল বছর সেই রেকর্ড ভেঙ্গেছেন নাসুম আহমেদ। ১৪ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৬ দশমিক ২২ রান।  

ফর্মে ফিরেছেন মুস্তাফিজ:

ইনজুরি সমস্যা কাটিয়ে নিজের সেরা রুপে ফিরেছেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। আসন্ন আসরে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ফিজ। গেল বছরের শুরু থেকে ১৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ওভার প্রতি দিয়েছেন ৭ দশমিক ৫২ রান, গড় ছিল ১৩-এর নিচে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের উইকেট থেকে আরো বেশি উপকৃত হবেন মুস্তাফিজ।

গেল বছর বাংলাদেশের পক্ষে ২০ দশমিক ৫০ গড়ে ৫৩টি উইকেট শিকার করেছেন ফিজ। সঙ্গে স্পিনাররা থাকায় টুনার্মেন্টে দারুণ এক বোলিং আক্রমণ নিয়ে খেলতে নামছে বাংলাদেশ।  

সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ :

মাহমুদউল্লাহ এমন একজন অধিনায়ক, চাপের মধ্যে নিজেকে মেলে ধরতে ভয় পান না। তরুণদের ভালো খেলতে এবং শিখতেও সুযোগ দেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খারাপ শুরুর পরও দলকে রক্ষা করেছেন এই অলরাউন্ডার। দুই সিরিজে একমাত্র হাফ-সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে টি-২০তে ১০০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। টপ-অডার্র ব্যর্থ হলেও প্রায়ই দলের ইনিংসকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধিনায়কত্ব খেলোয়াড়দের মুগ্ধ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নাসুম দু’টি শর্ট বল করেছিলেন। তখন অধিনায়ক রিয়াদ নাসুমকে উপদেশ দেন। সঙ্গে যোগ দেন সাকিবও। ঐ ম্যাচে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেয়ার পর নাসুম বলেন, মাহমুদউল্লাহ ভাই, সাকিব ভাইকে বলেছিলেন, আমার মত বোলিং করতে।
তার ব্যাপারে নাসুম আরো বলেন, মাহমুদউল্লাহ ভাই আমাদের খেলায় খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করেন না এবং আমাদের স্বাভাবিক খেলা খেলতে উৎসাহ দেন। এছাড়া ফলাফল নিয়ে আমাদের খুব বেশি চিন্তা না করতে বলেন। সিরিজে সময়োপযোগি বোলিং পরিবর্তনের মাধ্যমে কোচেরও প্রশংসা কুড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

সবকিছু বিবেচনায় আসন্ন টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ যে ডার্ক হর্স হতে পারে, এটা বলাই যায়। 

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –