• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী কি ফখরুল হবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮  

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পর সব মহলের একটি প্রশ্ন ছিল যে, ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? কূটনৈতিক মহল থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকর্মী সবাই ফ্রন্টের সঙ্গে বৈঠকে প্রথমেই এই প্রশ্ন করেছেন। এই প্রশ্নের উত্তর সবসময়েই এড়িয়ে গেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, সংসদ সদস্যরা যাকে ঠিক করবে তিনি হবেন ঐক্যফ্রন্টের প্রধানমন্ত্রী। আবার গণমাধ্যমের সঙ্গে বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, ‘তখন বসে আমরা ঠিক করবো।’ তবে বিএনপি এবং তাঁর মহাসচিব মির্জা ফখরুল আকারে ইঙ্গিতে বোঝাতে চেয়েছেন ড. কামাল হোসেনই তাদের নেতা। যুক্তরাজ্যের হাই কমিশনার তো ড. কামালকে প্রশ্নই করেছিলেন যে আপনি কি ভাবী প্রধানমন্ত্রী? ড. কামাল তখন তা নাকচ করে দেননি। কিন্তু আজ একই সঙ্গে দুটি ঘটনা ঘটল। আপিল বিভাগের এক আদেশের ফলে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সব সম্ভাবনা বিলীন হয়ে গেলো। একই দিনে, ড. কামাল হোসেন মনোনয়ন জমা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এ যেন এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতোই ঘটনা ঘটলো। আর এই দুই ঘটনায় সবচেয়ে লাভবান হলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এখন যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচনে জেতে তাহলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরই যে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই। কারণ সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী অনির্বাচিত কারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। তাই নির্বাচনে না দাঁড়িয়ে ড. কামাল হোসেন নিজেই নিজেকে অযোগ্য ঘোষণা করলেন। অন্যদিকে, নির্বাচনের উত্তাপ ছড়ানোর আগেই বেগম জিয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করল হাইকোর্ট।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই দুই ঘটনায় ভোটের মাঠে সরকার বিরোধীদের প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন মির্জা ফখরুল। এটা কি রাজনৈতিক কূটচালের ফসল নাকি কাকতালীয় সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। দলের হেভিওয়েট নেতাদের পিছনে ফেলে ফখরুলের বিএনপি মহাসচিব হওয়াটাই ছিল এক বিস্ময়। এরপর সরকার তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেয়। জেলে থাকতে হয়। জনপ্রিয়তা বাড়ে মির্জা ফখরুলের। সরকার কি মির্জা ফখরুলকে নেতা বানাতেই এই প্রকল্প নিয়েছিল? নেতা হবার পরই দেখা গেল, মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তার হন না। তাঁর মামলার বিচার এগোয় না। কিন্তু তারপরও তিনি জাতীয় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেননি। তবে দলের মূল নেতায় পরিণত হন। কিন্তু বিএনপিকে তো শুধু মির্জা ফখরুল দিয়ে ভোটের সাগর পাড়ি দেওয়ানো যাবে না। আবার ২০ দলে এমন কোনো ক্যারিশমাটিক নেতা নেই যিনি ২০ দলকে নেতৃত্ব দিতে পারে। এজন্য মির্জা ফখরুল দ্বারস্থ হন অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর। কিন্তু তাঁর সাথে দেন দরবার ঠিকঠাক না হওয়ায় ফখরুল ছুটে যান ড. কামালের কাছে। ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে তিনি বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে আনতে সক্ষম হন। কারণ ফখরুল একা ২০ দলে বা বিএনপিতে নির্বাচনে যাবার কথা বললে, দলেই তোপের মুখে পড়তেন। নির্বাচনে যাবার সিদ্ধান্ত তাই ড. কামাল হোসেনকে দিয়েই নেন। এরপর ড. কামাল বাদ, বেগম জিয়া বাদ। নির্বাচনের মাঠে ফখরুলই নেতা। এই প্রক্রিয়ায় তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে সাহায্য নিয়েছেন, তা বোঝার জন্য কোন পণ্ডিত হবার দরকার নেই। এখন কি ফখরুল প্রধানমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখছেন।

একে একে তাঁর সব বাঁধা কেটে গেছে। কিন্তু সামনে আছে আসল বাঁধা। নির্বাচনী মাঠে ফখরুল কি দলকে জেতাতে পারবেন? সেটা বোঝা যাবে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন। 

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –