• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

করোনা যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছে পুলিশ আনসার ও ফায়ার সার্ভিস

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২০  

মার্চ মাস থেকে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর আক্রান্ত হতে থাকে পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। এরপর দিন যতই গেছে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রাণ হারাতে হয় পুলিশের ৭৪ এবং আনসার ভিডিপির ১২ জনকে।

একপর্যায়ে এ তিন বাহিনীর আক্রান্তের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে। এতে বাহিনীর মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করলেও আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসা ও অন্যদের সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবস্থা করায় কমে গেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। পাশাপাশি সুস্থতার হার বেড়েছে কয়েকগুণ। এর ফলে করোনা সংক্রমণের শঙ্কা কেটে নবোদ্যমে কাজ করছে এ তিন বাহিনীর সদস্যরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ৮ এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১৫ হাজার ১৫০ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছে ১৪ হাজার ৪৫৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭৪ জনের। সংক্রমণের সংখ্যার বিচারে জুন মাসে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮৯৭ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছে। সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৫ জনের মৃত্যুও হয়েছে এ মাসে। আর সর্বনিম্ন আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে অক্টোবর মাসে। মাত্র ১ জনের মৃত্যু হয়েছে অক্টোবরে। আর সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৪ জন সুস্থ হয়েছে জুলাই মাসে। তথ্যানুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয় ৬১১ জন পুলিশ সদস্য। এ সময়ে সুস্থ হয়েছে ২৮ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জন পুলিশ সদস্যের। এরপরেই জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এরই ধারাবাহিকতায় মে মাসে ৩ হাজার ৭৪৩ জন আক্রান্ত, ১ হাজার ৯২১ জন সুস্থ ও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুনে ৪ হাজার ৮৯৭ জন আক্রান্ত, ৩ হাজার ৬৯৯ জন সুস্থ ও ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। জুলাই থেকে আক্রান্ত ও মৃত্যু কমতে শুরু করে। জুলাইয়ে ৩ হাজার ৫৬০ জন আক্রান্ত, ৪ হাজার ৮০৪ জন সুস্থ ও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগস্টে ১ হাজার ৭৩৪ জন আক্রান্ত, ২ হাজার ৭৫৯ জন সুস্থ ও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেপ্টেম্বরে ৬০৫ জন আক্রান্ত, ১ হাজার ২৪৩ জন সুস্থ ও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অক্টোবরে মাত্র ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সদস্যদের করোনা সংক্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালসমূহে ঢাকার একই চিকিৎসা প্রটোকলে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। মূলত আইজিপির নেতৃত্বে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়ায় পুলিশে মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়া, পুলিশ সদস্যরা যাতে করোনায় সংক্রমিত সংক্রমণ না হয়, সে জন্য মাঠ পর্যায়সহ সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী দেয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ভিটামিন ডি.সি. জিংক ট্যাবলেটসহ অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে।

আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গত ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত আনসার ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর মোট ১ হাজার ২৭১ জন আক্রান্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ১৬ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। গত কয়েকদিন ধরে নতুন করে আক্রান্ত না হওয়ায় সংক্রমণ প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে গেছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুন মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে। এরপরে পর্যায়ক্রমে কমে গেছে সংক্রমণের হার। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বাহিনীটির মোট ২৮৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে শুধু ১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাকিরা সবাই সুস্থ। এ বাহিনীতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। আক্রান্তের গ্রাফ দেখলে দেখা যায়, এপ্রিল মাসে মাত্র ৫ ফায়ারম্যান আক্রান্ত হলেও মে মাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১১৫ জন সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়। জুন মাসে ৮১ জন আক্রান্ত হলেও এরপর থেকে পর্যায়ক্রমে কমে আসে আক্রান্তের সংখ্যা। জুলাইয়ে ৫০, আগস্টে ৩০, সেপ্টেম্বরে ৩ জন এবং অক্টোবরে মাত্র ১ জন আক্রান্ত হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা মো. রায়হান বলেন, সারাদেশে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পরই আশঙ্কা করা হচ্ছিল ফায়ার সার্ভিসেও আঘাত আনতে পারে এটি। এরই অংশ হিসেবে মহাপরিচালকের নির্দেশে পূর্বাচলে করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আইসোলেশন সেন্টার ও আক্রান্তদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং করোনা প্রতিরোধে সামগ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা করায় সংক্রমণ বর্তমানে শূন্যের কোটায় নেমে গেছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –