• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

লকডাউনেও আনন্দের বন্যা বইছে গাইবান্ধার সবজিচাষিদের মাঝে

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ মে ২০২১  

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় টানা লকডাউনে জনজীবন স্থবির হলেও আনন্দের বন্যা বইছে গাইবান্ধার সবজিচাষিদের মাঝে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় শসা থেকে শুরু করে করলা, ঝিঙা, মরিচ ও টমেটো গত বছরের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি করতে পারছেন কৃষকরা। এতে লাভবান হচ্ছেন তারা।

কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, জেলায় এবার চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে চার হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন সবজি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় সে ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন কৃষকরা।

গত বছর লকডাউন ও বন্যায় জেলার সাতটি উপজেলার কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। টমেটো, করলা, শসা বিক্রি না হওয়ায় জমিতেই পচে গেছে। কিন্তু এ বছরের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। এ বছর লকডাউনের প্রভাব কৃষকদের ওপর পড়েনি বরং ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারা। এবার তারা তিন-চার গুণ বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে পারছেন। আবার পবিত্র রমজান মাস চলায় সবজির দামও বেড়েছে।

সরেজমিনে জেলার গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সবজিচাষিদের মনে আনন্দের বন্যা বইছে। জমি থেকেই বিক্রি হচ্ছে শসা, করলা, ঝিঙাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি। ব্যবসায়ীরা এসে দরদাম করে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকের জমিতে থাকা সবজি।
সাদুল্লাপুর উপজেলা হিঙ্গারপাড়া গ্রামের সবজিচাষি মাসুদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতবার লকডাউন ও বন্যার কারণে সবজি বাজারে নিয়ে যেতে পারি নাই, জমিতেও বিক্রি করতে পারি নাই। কিন্তু এ বছর লকডাউন হলেও বিভিন্ন সবজির চাহিদা আছে। পাশাপাশি বাজারও ভালো। এ বছর মোটামুটি লাভবান হয়েছি। যে কয়দিন বাজারে সবজি বিক্রি করেছি, লাভ করেই বিক্রি করেছি।

একই উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের শসাচাষি আজাদুল ইসলাম বলেন, গত বছর লকডাউনে লস খাইছি। ২০০ টাকা মণও বিক্রি করতে পারি নাই। এ বছর শসা জমিতেই ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা মণ বিক্রি করছি। কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছে। এবার লকডাউনেও দাম আছে ভালো।

উত্তর নিজপাড়া গ্রামের কৃষক মনির মিয়া বলেন, গতবার লকডাউনে মার (লোকসান) খায়া গেছি। এবার ইনশাআল্লাহ ফলনও ভালো হয়েছে। দামও বেশ ভালো পাচ্ছি। এমনটা অব্যাহত থাকলে কৃষকরা কিছু করতে পারবে।
ছোট ছত্রগাছা গ্রামের কৃষক মতিন মিয়া বলেন, রমজানের শুরুতেই সব ধরনের সবজির দাম বেশি ছিল। এখন কিছুটা কম। তবে এখনো বিক্রি করে বেশ লাভেই আছি।

এদিকে জেলার বিভিন্ন সবজির হাট ও আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে উৎপাদিত সবজি পর্যাপ্ত রয়েছে। পাশাপাশি সবজির চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। দাম ভালো পাওয়ায় একদিকে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা, অন্যদিকে সবজি ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, গত বছর করোনাভাইরাস হানা দেওয়ায় সেই প্রস্তুতির সঙ্গে কেউই অভ্যস্থ ছিলেন না। যে কারণে কৃষকদের পণ্য পরিবহন ও বাজারজাতকরণে অসুবিধার মুখে পড়ে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু এ বছরে চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। এ বছর কৃষকদের পণ্য পরিবহন শুরু করে সব ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি।

তিনি বলেন, কৃষকরা হয়রানি থেকে মুক্তি পেয়েছেন। অবাধে তারা বাজারে সব ধরনের সবজি বিক্রি করতে পারছেন। কৃষি বিভাগের তৎপরতা ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবার কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। সর্বোপরি ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ ঠিক থাকায় গত বছরের চেয়ে লাভও হচ্ছে বেশি।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –