• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সিনেমা হলের সোনালি অতীত এখন ইতিহাস

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ এপ্রিল ২০২১  

দর্শক হারিয়ে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের সিনেমা হল থেকে। জেলার ১৬টি সিনেমা হলের মধ্যে ১৪টিই বন্ধ হয়েছে। চালু রয়েছে মাত্র দুটি।

অব্যাহত লোকসান, নিম্নমানের ছবি ও ইন্টারনেটের কারণে হাল ব্যবসায় ধস নেমেছে। ফলে হল ভেঙে করা হয়েছে বসতবাড়ি, বিদ্যালয় কিংবা মার্কেট। সব মিলে ঠাকুরগাঁয়ে সিনেমা হল এখন বিলুপ্তির পথে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের বলাকা সিনেমা হলকে করা হয়েছে সিমেন্টের গোডাউন ঘর। মৌসুমী হলটি ভেঙে বাননো হয়েছে স্কুল। আর আলেয়া সিনেমা হলের জায়গায় করা হয়েছে মার্কেট।

এছাড়া অন্যান্য হলগুলোর কোনো চিহ্নই পাওয়া যায় না। বর্তমানে জেলার রাণীশংকৈলে একটি ও পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি হল চালু রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী বলেন, একসময় এ জেলায় ১৬টি সিমেনা হল ছিল। দর্শক না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে ১৪টি হল। চালু থাকা দুটি হলও বন্ধের পথে।

সাংস্কৃতিক কর্মী মাসুদ আহম্মেদ সুবর্ণ বলেন, একসময় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সিনেমা দেখতে ঠাকুরগাঁওয়ে মিনিবাস, ট্রাক্টর, পিকআপ বা ভ্যান ভাড়া করে দর্শক আসতেন। টিকিট পাওয়া নিয়ে চলত প্রতিযোগিতা। দর্শকদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হতো হল কর্মচারীদের। তখন জেলার সবকটি হল বছরজুড়ে জমজমাট থাকত। তবে সেই সোনালি অতীত এখন শুধুই ইতিহাস।

শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাহিদ রেজা বলেন, নিম্নমানের ছবি ও নোংরা পরিবেশের কারণে দর্শকরা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সিনেমা হলগুলোকে ভুলতে বসেছে সাধারণ মানুষ। বর্তমান প্রজন্ম হল বলতে কোনো জিনিস ছিল সেটাই জানে না।

জেলা উদীচী শিল্পগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক রিজু বলেন, হলগুলোকে পুরানো রূপে ফিরিয়ে আনতে উন্নত মানের সিনেমা তৈরি করতে হবে। যাতে দর্শকরা আবারও হলমুখী হয়। এজন্য সরকারের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

বলাকা সিনেমা হলের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম বলেন, লোকসান হওয়ায় মালিক হল বন্ধ করে দিয়েছে। বর্তমানে সেটি গোডাউন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

মৌসুমী সিনেমা হলের মালিক মনিরুল ইসলাম বলেন, লোকসানের কারণে হল বন্ধ করে সেটি স্কুলঘর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। জেলার ১৪টি হল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে মালিকরা। বর্তমানে দুটি চালু রয়েছে। সেগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে শিগগিরই।

তিনি বলেন, হল সচল রাখতে সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

সরকারি সহযোগিতা, মানসম্মত ছবি ও আধুনিকায়ন করলে হলে দর্শক ফিরবে বলে মনে করেন মনিরুল ইসলাম।

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নুর কুতুবুল আলম বলেন, হল মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বন্ধ হলগুলো পুনরায় চালুর চেষ্টা চলছে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –