• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঠাকুরগাঁওয়ে গরু চুরির অভিযোগে মালিক নিজেই জেলে

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ জানুয়ারি ২০২২  

ঠাকুরগাঁওয়ে নিজের গরু চুরির অভিযোগে জেলে রয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী গোলাম হোসেন। বড় ছেলের বিয়ের জন্য বাড়িতে থাকা দুটি গরু বিক্রি করেন তিনি। ‘নিজ গরু বিক্রি করে মালিক বনে গেলেন চোর’ এমন কথা এখন মানুষের মুখে মুখে।

সোমবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলাধীন মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ বাজারে গরুর মালিক গোলাম হোসেনসহ গরু ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

জানা গেছে, ছেলের বিয়ের জন্য চার হাজার অগ্রিম নিয়ে বাকি এক লাখ বিশ হাজার টাকায় বাড়িতে পালন করা দুটি গরু বিক্রি করতে ব্যবসায়ী হাসেম আলীসহ চারজনকে দেন গোলাম হোসেন। ব্যবসায়ীরা গরু দুটি সোমবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে যান। বিক্রি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা গরু দুটি চুরি করে এনেছে এ কথা শুনে বাজারে ছুটে যান গরুর মালিক গোলাম হোসেন। কিন্তু পুলিশ কোনো তদন্ত না করে গরুর মালিক গোলাম হোসেনসহ ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নিয়ে যান।

প্রতিবেশীরা জানান, গোলাম হোসেন ৪-৫ মাস আগে গড়েয়া হাট থেকে গরুটি কেনেন। অনেক কষ্ট করে তিনি গরুটি লালন-পালন করেন। নতুন ঘর করবেন বলে তিনি গরু বিক্রি করেন। কিন্তু আজ তিনি নিজের গরু বিক্রি করতে গিয়ে চোর হয়ে গেলেন। এটা কেমন অত্যাচার?

রফিকুল নামে এক প্রতিবেশী বলেন, আমরা একসঙ্গে গড়েয়া বাজার থেকে গরু কিনেছি। আমরা গরিব লোক বলে কোনো বিচার নেই? গরু পালতে গিয়ে কি আমরা চোর হয়ে গেলাম?

গোলাম হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন বলেন, খেয়ে না খেয়ে ঋণ করে পাঁচ মাস আগে গড়েয়া বাজার থেকে দুটি গরু কিনেছিলাম। এখনো সেই ঋণ শোধ হয়নি। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয়। ছেলের বিয়ে দেব বলে নতুন ঘর তৈরি করতে আমরা গরু দুটি বিক্রি করি। বিক্রি করতে গিয়ে আজ আমার বৃদ্ধ স্বামী চোর হয়ে জেলখানায়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বলেন, আমি নির্বাচন চলাকালীন গোলাম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখি তিনি গরুগুলো লালন-পালন করেন। আমি এর আগেও পাঁচ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব থাকাকালে গোলাম হোসেনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। সরল মানুষ কোনো ধরনের খারাপ কাজের সঙ্গে লিপ্ত না। তিনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম বলেন, ২ জানুয়ারী আতাবুর রহমানের বাসা থেকে পাঁচটি গরু চুরি হয়। সেই মর্মে থানায় মামলা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খবর পান গোলাপগঞ্জ বাজারে একটি গরু শনাক্ত করেন আতাবুর। এরপর পুলিশ গিয়ে গরুসহ পাঁচজনকে ধরে নিয়ে এসে আদালতে সোপর্দ করে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –