• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

পীরগঞ্জে বৃষ্টির আশায় দুই ব্যাঙের বিয়ে, দেনমোহর ৯ লাখ

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৩  

নেই বৃষ্টিপাত, সঙ্গে প্রচন্ড দাবদাহ। পুড়ছে বিভিন্ন জনপদ। জনজীবনে দেখা দিয়েছে নাভিশ্বাস। এমন খরায় ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হবে-সেই বিশ্বাস থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে এবার ইসলাম ধর্মের রীতি মেনেই বুধবার রাতে মেঘ-বৃষ্টি নামে দুই ব্যাঙের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়েছে অনেককেই। 

হলুদ বাটা, গায়ে হলুদ, দলবেধে বিয়ের গীত গাওয়া, ইজাব-কবুল করার মতো আয়োজন কোনো মানুষের বিয়ের জন্য নয়। বৃষ্টির আশায় ঘটা করে দেওয়া হয়েছে দুটি ব্যাঙের বিয়ে। পীরগঞ্জসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলায় কয়েক দিন ধরে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। গরমে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়পুর প্রধান পাড়ায় বুধবার আয়োজন করা হয় এমন বিয়ের।

বর হিসেবে মেঘ নামে একটি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ভাকুড়া খালপাড়ার আনিসুরের বাড়িতে। আর কনে হিসেবে বৃষ্টি নামে অপর একটি ব্যাঙের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান হয় নারায়ণপুর গ্রামের আমজাদ আলীর বাড়িতে। শাড়ি, কাপড় দিয়ে সাজানো হয় বর-কনেকে। টিপ ও আলতাও পড়ানো হয় কনে ব্যাঙ বৃষ্টিকে। বিকেলে গায়ে হলুদের পর্ব শেষ করে সন্ধ্যায় ভাকুড়া খালপাড়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরযাত্রী নিয়ে নারায়ণপুরে কনে বৃষ্টির বাড়িতে আসে বরপক্ষ। খাওয়া-দাওয়া শেষে ইসলাম ধর্মের রীতি মতে কাজি ডেকে দেনমোহর ধার্য করে ইজাব-কবুল করানো হয় বর ও কনেকে। সম্পন্ন হয় বিয়ে। এ সময় ব্যাঙের এ বিয়ে দেখতে নারী পুরুষের ঢল নামে।

কনে বৃষ্টির পিতা আমজাদ আলী জানান, এ বিয়ের দেন মোহর ধার্য করা হয় ৯ লাখ ৯ হাজার ৯৯৯ টাকা। এরমধ্যে নগদ ৩ লাখ ৩ হাজার ৩৯৯ টাকা এবং অবশিষ্ট টাকা বাকি রেখে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। বিয়ে শেষে উপস্থিত লোকজনের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

মিনারা বেগম নামে এক গৃহবধূ জানান, ব্যাঙের বিয়ে হচ্ছে শুনেই দেখতে এসেছেন। মানুষের মতো ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া এটাই প্রথমবারের মতো তিনি দেখেছেন। এতে তার খুব ভালো লেগেছে।

তবে সোহেল হাসান শুভ নামে এক যুবক জানান, ইসলামী বিধান অনুসরণ করে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এটি কুসংস্কার। এমন আয়োজন এবার প্রথম দেখলেন তিনি। বিয়ের পরদিন বৃহস্পতিবার বর মেঘের বাড়িতে আয়োজন করা হয় বৌভাতের। নিমন্ত্রণ পেয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নেন অনেকেই।

ব্যাঙের বিয়ে বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, লোকজ বিশ্বাস থেকে প্রবাহমান বাংলার এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –