• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৭ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

‘পিক’ কীটনাশক ব্যবহারে নষ্ট আলুর ক্ষেত, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২৪  

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নজমুল ইসলাম। লাভের আশায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ শুরু করেছেন তিনি। 

আলু গাছের উর্বরতা বাড়াতে জানুয়ারি মাসের ৮ তারিখ  ‘পিক’ নামে একটি মাইক্রো পুষ্টি কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি। পরের দিন থেকে আলু ক্ষেতে পচন ও নষ্ট হওয়া শুরু হয়। তারপর থেকে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তিনি৷

স্বপ্ন ছিল লাভের টাকায় ঋণ পরিশোধ করে ফিরিয়ে আনবেন সংসারে স্বচ্ছলতা৷ আলু ক্ষেতের শেষ সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি৷

শুধু নাজমুল নন তার মতো একই গ্রামের আরো ১০ জন কৃষক এসএএম (SAM) এগ্রো কেমিক্যালের মাইক্রো ভিটামিন "পিক" কীটনাশক ব্যবহার করে আলুর ক্ষেত নষ্টের অভিযোগ করেছেন৷ সেই গ্রামের ১০ জন কৃষকের ৭ একর জমির আলুর ক্ষেতে পচন ধরেছে৷ 

সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলুর গাছ গুলো মরে যাওয়া শুরু করেছে। আর আলুর শেকড়ে পচন ধরে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেতের এমন দুরবস্থা দেখে দিকবিদিকশূন্য হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা৷

আলু চাষি নজমুল ইসলাম বলেন, শুরুতে আমার আলু গাছ গুলো বেশ ভালো ছিল৷ পিক ব্যবহার করার পরের দিন থেকে গাছ গুলো মরে যাওয়া শুরু করে৷ নিচের শেকড়ে পচন হয়ে সব শেষ হয়ে গেছে৷ আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। সেটা না হলে কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব৷

আরেক চাষি বাচ্চু বলেন, আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে যা খরচ হয়েছে সেটি আমাদের দেওয়া হোক। তাদের কীটনাশক ব্যবহার করে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল৷

কীটনাশক বিক্রেতা আলম হোসেন বলেন, এই কোম্পানির কীটনাশক অনেক দিন থেকে বিক্রি করে আসছি৷ এর কাজও অনেক ভালো। এবারে যারা পিক কীটনাশক দিয়েছেন সবার আলু ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে৷ আমি কোম্পানির লোককে অবগত করেছি তারা দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন৷

এসএএম এগ্রো ক্যামিকেল এর এরিয়া ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, পিক ব্যবহার করার কারণে এমন হয়েছে৷ আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখে আমারও এটি মনে হয়েছে। সকলে পিক ব্যবহার করার কারণে নষ্ট হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমন খবর শোনার পর আমরা সেই ক্ষেত গুলোতে গিয়েছিলাম। সে ক্ষেত গুলোতে আর আলু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইতিমধ্যে আমরা কীটনাশকটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি৷ এটি যাতে আর বিক্রি না হয় এবং কৃষকদের ক্ষতিপূরণে আমরা সমন্বয় করছি৷

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –