একটি রক্তমাখা স্থগিত কনভোকেশন ও একজন বঙ্গবন্ধু
– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১
জহিরুল হক মজুমদারঃ
১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জন্য এক শোকাবহ দিন। পঁচাত্তরের এই দিনের প্রথম প্রহরে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করা হয় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে। শিশুপুত্র রাসেল, সারাজীবনের অনুপ্রেরণাদায়িনী সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এবং পরিবারের অন্য সকল সদস্যসহ ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত হন তিনি। বিদেশে অবস্থানের কারণে বেঁচে যান তার দুই কন্যা, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তাঁর মৃত্যু ছিল বিশ্বাসের মৃত্যু। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন কোন বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে না।
হত্যাকারীদের অনেকেই ছিল তার পূর্বপরিচিত, স্নেহভাজন। ৩২ নম্বর বাড়িতে তাদের ছিল নিত্য আসা-যাওয়া। কী নির্মম এই হত্যাকারীরা। যে দরজা দিয়ে তারা স্নেহের অন্বেষণে প্রবেশ করেছে। বহুবার, সেই একই দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছে হত্যাকারী হয়ে! হত্যাকারীর বন্দুকের মুখে অবিচল ছিলেন বঙ্গবন্ধু, যেমনটি তিনি ছিলেন পঁচিশে মার্চের রাতে। সেনাপ্রধান শফিউল্লাহর কাপুরুষোচিত পরামর্শে কান না দিয়ে প্রত্যয়দীপ্ত ব্যক্তিত্বে তিনি এগিয়ে যান ঘাতকদের দিকে। একজন ঘাতক বন্দুক লুকিয়ে ফেলে এই বিশাল ব্যক্তিত্বের সামনে। অপর ঘাতকের নির্বোধ বুলেটের ঝাঁক বিদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর শরীর। সিড়িতে লুটিয়ে পড়েন তিনি, এক মুহূর্ত বেশি বাঁচার আকাক্ষার ভঙ্গিতে নয়, হতাশা আর বেদনার ভঙ্গিতে। এ বেদনা নিজেকে নিয়ে নয়, তার মানুষদের নিয়ে। এ হতাশা এক মহাযাত্রায় তাদের অভিভাবকহীন ফেলে যাওয়ার হতাশা। মহাপ্রস্থানের পথেও তিনি বেদনার চোখে পেছন ফিরে তাকিয়েছেন তার সাড়ে সাত কোটি মানুষের দিকে। সিড়িতে পড়ে থাকা তাঁর পবিত্র শবদেহের দিকে তাকালে এমনই মনে হয়।
১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে চিরকাল এক রক্তাক্ত অধ্যায় হয়ে থাকবে। জাতির পিতার নির্মম হত্যাযজ্ঞের দিন হিসেবে সমগ্র জাতির শোকের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক ও বেদনা আরও বেশি। কারণ সেদিন বঙ্গবন্ধুর আসার কথা ছিল এখানে। উপলক্ষ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশন। দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সনদ বিতরণ করার কথা ছিল তাঁর। এটাই ছিল স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম কনভোকেশন। ঘাতকের নির্মম বুলেট থামিয়ে দিল বাংলাদেশকে। স্তব্ধ হয়ে গেল শ্রাবণের বৃষ্টি। এই বারিধারা কোথায় ধুয়ে নিয়ে যাবে বঙ্গবন্ধুর রক্তস্রোত!
১৪ আগস্ট রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং ডাকসুর নেতারা ব্যস্ত ছিলেন কনভোকেশনের আয়োজন ও সাজসজ্জায়। রাতের কোন এক সময় তৎকালীন ডাকসু ভিপি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সদ্যবিবাহিত শেখ কামালকে বলেছিলেন বাসায় চলে যেতে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শেখ কামাল মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে এমএ ক্লাসের ফলাফলের জন্য দিন গুনছিলেন। সেলিম পরে দুঃখ করে বলেছিলেন, তিনি যদি সেদিন শেখ কামালকে বাসায় যেতে না বলতেন তাহলে হয়তো তিনি বেঁচে যেতেন। বঙ্গবন্ধু সেদিন ক্যম্পাসে এলে যে কজন শিশুর তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করার কথা ছিল তাদের মধ্যে শেখ রাসেলেরও থাকার কথা। আহা! ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাসেল ছিল ঘাতকদের নির্মমতার সর্বশেষ শিকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকদের বরাতে জানা যায় যে, তৎকালীন উপাচার্য আবদুল মতিন চৌধুরী যখন কনভোকেশনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে দাওয়াত দিতে যান তখন তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেছিলেন, তাকে বাদ দিয়ে কোন জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিকে দিয়ে সনদ বিতরণের কাজটি করতে। বঙ্গবন্ধু নিজেকে সাধারণ শিক্ষিত লোক মনে করতেন। উপাচার্য মতিন চৌধুরীও বিনয়ের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনিই চ্যান্সেলর এবং সমাবর্তন তাঁর উপস্থিতি ছাড়া হতে পারে না। উপাচার্য চৌধুরীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সম্পর্ক ছিল পারস্পরিক শ্রদ্ধার ও হৃদ্যতার। বয়সে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর চেয়ে ছোট। প্রথম পরিচয়ের দিন থেকেই বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক চৌধুরীকে স্যার বলে সম্বোধন করতেন। শিক্ষিতজনদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সম্মানবোধ ছিল উচ্চ। দুজনের প্রথম সরাসরি পরিচয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবদুল মতিনের করাচির বাসায়, ১৯৬৯ সালে। প্রকৌশলী মতিন জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু আরও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাসহ তার করাচির বাসায় এসেছিলেন। সেখানে প্রফেসর মতিন চৌধুরীসহ তার আরও কজন বন্ধু উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রফেসর মতিন চৌধুরীকে স্যার বলে সম্বােধন করে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে আলাপ শুরু করেন। অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। ১৯৭৩ সালে দেশে ফিরে এলে বঙ্গবন্ধু তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব প্রদান করেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে, বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর এই অসাধারণ উদারহৃদয় বঙ্গবন্ধুভক্ত শিক্ষককে কারাগারে নিক্ষেপ করে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার। স্বাধীন বাংলাদেশে কোন উপাচার্যের কারাগারে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। যে কনভোকেশন বঙ্গবন্ধুর হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডে স্থগিত হয়ে গেল, সেটির ব্যয় নির্বাহের জন্য অন্য খাত থেকে কিছু অর্থ খরচ করেছিলেন অধ্যাপক মতিন। সেটা তিনি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের অনুমতি সাপেক্ষেই। এ রকম একটি সাধারণ বিষয় সরকারি অর্থের তছরুপ হিসেবে গণ্য করে সামরিক ট্রাইব্যুনালে বিচারের আয়োজন করা হয় উপাচার্য মতিন চৌধুরীর। দণ্ড দিয়ে তাঁকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। অনেকেই মনে করেন যে, অর্থ এখানে বড় বিষয় ছিল না, বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসাই উপাচার্য অধ্যাপক মতিন চৌধুরীকে কারাগারে নিক্ষেপের মূল কারণ।
আমার সারাজীবনের অমীমাংসিত বিস্ময় এই যে, সেই সামরিক ট্রাইব্যুনালে অধ্যাপক মতিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন প্রখ্যাত পণ্ডিত সর্বজন শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক আহমদ শরীফ। শরীফকে সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক বলে জেনে এসেছি। আজীবন সেকুলার এই অধ্যাপক মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতেন, ইয়াহিয়ার সামরিক সরকারকে দেখানোর জন্য। যদিও ক্লাস করার মতো কোন শিক্ষার্থী তখন ক্যাম্পাসে ছিল না। পরে তিনি বলেছিলেন, পরিবারের চাপে ও জীবন রক্ষার তাগিদে তিনি এটা করতেন। মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র এবং শিক্ষকরা তার এই ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু অধ্যাপক মতিনের বিরুদ্ধে তার সাক্ষ্যদানের প্রসঙ্গে প্রশ্ন জাগে মনে, জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের সময়ও কি তার জীবনাশঙ্কা ছিল? বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার কাছে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে বলি, আপনার সারাজীবনের ত্যাগ আর রক্তের ঋণ আমরা শোধ করতে পারিনি। যে কোন মুল্যে আপনার রক্তের ঋণ শোধ করবই। রক্তের ঋণ শোধ করা ছাড়া রক্তের উত্তরাধিকার হওয়া যায় না। আমরা শুধু বাংলাদেশ পাইনি, আপনাকে আরও বেশি পেয়েছি। এই পলিমাটির বীপ হয়তো একদিন ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আমাদের কোন ভূমি থাকবে না। আমরা বাস করব নৌকায়। তারপরও আমরা আমাদের তখনকার সংগ্রামের দিনগুলোতে আপনাকে স্মরণ করব। আমরা বলব, আমাদের একজন নেতা ছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আমাদের সংগ্রাম করতে শিখিয়েছেন, স্বাধীনতা শিখিয়েছেন।
– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –- জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ
- সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জে ২৭ জনের মনোনয়ন দাখিল
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম মেলা উপলক্ষে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন
- বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় খাদ্যপণ্য
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের পরিবারভুক্ত
- `নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে`
- সরকারি গুদামে হয়রানি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা: খাদ্যমন্ত্রী
- সংসদ অধিবেশন চলবে ৯ মে পর্যন্ত
- ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃসীমান্ত নদীর বন্যার তথ্য আদান-প্রদান শুরু
- পীরগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ গ্রেপ্তার-২
- গরমে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে যা করবেন
- মুস্তাফিজের আইপিএল অভিজ্ঞতা কাজে দেবে: শান্ত
- সাংবাদিক হতে গিয়ে যেভাবে নায়িকা হলেন আনুশকা
- শ্রমিক ঠকানোর ভয়াবহ পরিণতি
- স্বস্তির পরশ ছড়িয়ে রংপুরে ঝরল বৃষ্টি
- হাতপাখায় চলে আজিজুলের সংসার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা সরকারের
- সরাসরি মুসলিমদের নিশানা করে ভোট প্রচারে মোদি
- জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ
- সরকারি অফিস চলবে ‘এআই’ প্রযুক্তিতে
- যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী
- শ্রমিকদের কল্যাণে বিশেষ নজর দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী
- শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী
- হজ পালনে অনুমতি বাধ্যতামূলক করল সৌদি
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে আরো উদ্যোগী হতে হবে: প্রতিমন্ত্রী শফিকুর
- সংগত কারণ ছাড়া প্রকল্পের ধীরগতি মানা হবে না: রেলমন্ত্রী
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- ঈদে স্বপ্ন বাড়ি যায়নি বেরোবি শিক্ষার্থী আফ্রিদির, ফিরবে লাশ হয়ে
- নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্তক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের
- সূচকের উত্থানে পুঁজিবাজারে চলছে লেনদেন
- ভারতের নির্বাচনের পর দিল্লি সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- আবারো কমলো সোনার দাম
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- মে মাসে ৪৪ ডিগ্রি পৌঁছাবে তাপমাত্রা
- গাজায় মৃত্যু ৩৩ হাজার ছাড়াল, ঘণ্টায় ৪ শিশু মৃত্যু
- ভূমিহীনদের ভূমি অধিকারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
- থাই গভর্নমেন্ট হাউজে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান গণপূর্তমন্ত্রীর
- তীব্র গরমের মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড়-শিলাবৃষ্টি
- কোরবানির নিয়তের পর পশু বিক্রি করার বিধান