• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

কারো ক্ষতি করার ভয়াবহ পরিণতি

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২১  

মুমিনরা সর্বদা তার দ্বিনি ভাইদের কল্যাণকামী হয়। তারা কখনো অন্যের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করে না। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা নিয়ে উল্লাসও করে না। কারণ এটা ইসলামের শিক্ষা নয়। ইসলামের শিক্ষা হলো, সর্বদা অন্যের উপকার করার চেষ্টা করা। কারণ যারা মানুষের উপকার করে, আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন। এর বিপরীতে যারা অন্যের ক্ষতিসাধনের সুযোগ সন্ধানে লিপ্ত থাকে, মহান আল্লাহ তাদের সাময়িকভাবে ছাড় দিলেও তাদের কখনো ছেড়ে দেন না। দুনিয়া হোক কিংবা আখিরাত, এই গুনাহের শাস্তি তাদের অবশ্যই ভোগ করতে হবে। আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তাআলা তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাআলা তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

কারো বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, কাউকে কষ্টে ফেলে দেওয়া কল্যাণ বয়ে আনে না; বরং এগুলো মানুষকে তিলে তিলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। মহান আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত করে দেয়। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘কেউ অন্যের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। কেউ অযৌক্তিকভাবে কারো বিরোধিতা করলে আল্লাহ তার বিরোধী হবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)

আর মহান আল্লাহ নিজেই যার বিরোধী হবেন, তার চেয়ে হতভাগা আর কে হতে পারে? মহান আল্লাহ তাদের মন থেকে অপরাধবোধটাও তুলে দেন, ফলে তারা অন্যের ক্ষতি করে, অন্যের হক নষ্ট করে গর্ববোধ করে, যা তাদের পূর্ণ ধ্বংসের দিকে টেনে নেয়। তাদের দেউলিয়া করে দেয়। তাদের যশ-খ্যাতি তাদের কোনো উপকারেই আসে না। তারা পাহাড়সম আমল নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হলেও এগুলো তাদের কোনো কাজেই আসবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের প্রশ্ন করেন, তোমরা কি জানো, দেউলিয়া কে? তারা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে ওই ব্যক্তি, যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোনো সম্পদও নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে ওই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া যে কিয়ামত দিবসে নামাজ, রোজা, জাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সঙ্গে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে, ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেওয়ার আগেই তার সৎ আমল নিঃশেষ হয়ে গেলে তাদের গুনাহ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে, তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৮)

নাউজুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। সুবুদ্ধি ও হিদায়াত দান করুন।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –