• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কয়েকটি কারণে ‘মরণোত্তম’ ভালো লাগেনি

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২১  

কয়েকটি কারণে ‘মরণোত্তম’ ভালো লাগেনি। এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমি কিন্তু সাদাত হোসাইনের উপন্যাস সম্পর্কে মতামত দিচ্ছি না। তা পোস্টার দেখে নিশ্চয়ই অনুমান করছেন। এবার কারণগুলো বলি-

১. দুর্বল চিত্রনাট্য (একটি সার্থক উপন্যাস চিত্রনাট্যের কারণে দুর্বল হয়ে গেল)
২. সাদামাটা মেকিং (এই পরিচালকের আর কোনো কাজ সম্পর্কে আমার ধারণা নেই)
৩. ইলিয়াস কাঞ্চনের ছিচকাঁদুনে অভিনয়। সব সংলাপে কান্নার কোনো মানে খুঁজে পাইনি। 
৪. একমাত্র শহিদুজ্জামান সেলিম ছাড়া আর কারও অভিনয় আমাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। 
৫. মেকাপে বৃদ্ধ মনে হয়নি; অথচ সংলাপে বলা হচ্ছে ‘বৃদ্ধ স্কুল মাস্টার’
৬. ইউটিউব-ফেসবুকের যুগে ছোট ব্ল্যাকবোর্ড, চক-ডাস্টার দেখে হাসি পেল। এখন প্রায় স্কুলে হোয়াইট বোর্ড আর মার্কার ব্যবহার করা হয়।
৭. শহীদ মিনারের অনশনে কাগজের বা ডিজিটাল প্ল্যাকার্ড হলে ভালো লাগতো...
আমার বিশ্বাস, কাজটি আরও সুন্দর হতে পারত। ধর্ষণের মতো একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত টেলিফিল্ম এমন পানসে হলো কেন বুঝতে পারছি না। শরীর শিউরে ওঠে না। নিজের ভেতরে প্রতিবাদ গর্জে ওঠে না। সহমর্মিতা জাগে না। তাহলে এই নির্মাণের উদ্দেশ্য কী? 

স্কুলের এমপিওভুক্তির সঙ্গে ধর্ষণকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এমপিওভুক্তির জন্য অনশন করতে গিয়ে ধর্ষণের বিচার চেয়ে আত্মহত্যা করলেন। ফ্ল্যাশব্যাকগুলো কেমন খাপছাড়া লেগেছে।

লেখকের কি সাংবাদিকদের উপরে অনেক ক্ষোভ? তা না হলে সাংবাদিকদের নেতিবাচক দিকগুলোই বারবার হাইলাইট করা হয়েছে। ঘটনাটি যে সময়ের; সে সময়ে কোহিনুরের আত্মহত্যা নিয়ে কি কোনোই সংবাদ হয়নি? তাই যদি না হবে, তাহলে শেষ দৃশ্যের দিকে বুম বা ক্যামেরা হাতে রাখা সাংবাদিকরা কোহিনুর সম্পর্কে এত তথ্য কোথায় পেলেন? 
বেশি অবাক হয়েছি, যখন কবি আসাদ আহমেদ বলেন, ‘এই শহরে কাকের চেয়ে পত্রিকার সংখ্যা বেশি।’ অথচ এতদিন জানতাম, ‘কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশি।’ আর এই কবিরাই একটি কবিতা প্রকাশের জন্য ইনিয়ে-বিনিয়ে কত কিছু বলে যান। 

আমার আরেকটি জিনিস মনে হয়েছে, এখানে ধর্ষকের চেয়ে সাংবাদিকদের ওপর বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। মনে হয়, সমাজে বা রাষ্ট্রে সাংবাদিক ছাড়া আর কারও কোনো দায় নেই। (আমি সাংবাদিক বলে কথাগুলো বলছি না। মনে রাখবেন, আমিও একজন লেখক। হয়তো খুব বেশি জনপ্রিয় না।)

আমার মনে হয়, এখানে নির্মাতা সাদাত হোসাইনকে যদি দেখতাম; তাহলে আরও সুন্দর একটি কাজ পেতাম। তিনি অন্তত পুরোপুরি মেসেজ আমাদের দিতে পারতেন। 

আপনারা যারা দেখেছেন, তাদের কাছে ভালো লাগতে পারে। আপনাদের ভালো লাগাকে শ্রদ্ধা জানাই। এলাকার বড় ভাই সাদাত হোসাইনের জন্য শুভ কামনা রইল। অনেক দিন ধরেই তাকে বলছিলাম, তার উপন্যাস নিয়ে সিনেমা-নাটক বানাতে। মরণোত্তম দিয়ে শুরু হলো। আশা করি, কাঙ্ক্ষিত কাজটি একদিন পেয়ে যাবো।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –