• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ, গোপনে সক্রিয় জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দৈনিক ঠাকুরগাঁও

প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮  

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও-২ আসন (বালিয়াঙ্গী, হরিপুর ও রাণীশংকৈল আংশিক) নিয়ে এই আসটি গঠিত। আর বিএনপি না জামায়াত সেই ধোঁয়াশা অনেকটাই কেটে গেছে। অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া দবিরুল ইসলামের সঙ্গে জামায়াত জেলার আমির মাওলানা আব্দুল হাকিমের। তবে বালিডাঙ্গী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ সরব উপস্থিতি দেখা গেলেও প্রকাশ্যে নড়াচড়া নেই জামায়াতের। নাশকতার মামলায় জামায়াতের প্রার্থী আব্দুল হাকিম কারাগারে থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তার কর্মী-সমর্থক ও অনুসারীরা নীরবে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির বেশিরভাগ কার্যক্রমই বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দবিরুল ইসলাম উপজেলায় বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন এরপর বর্ধিত সভার মাধ্যমে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। এ সময় মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরাও নৌকার জয় ছিনিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দেন।

এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জানান, এখন মূলত তারা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনে ব্যস্ত সময় পার করছে। এরপর ১০ ডিসেম্বর থেকে দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামবেন।

জামায়াতের প্রার্থীর অনুসারীরা বলেন, সরকার আমাদের দলকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে নেতা কর্মীদের জেল হাজতে রেখে আবার ক্ষমতায় যাওয়া স্বপ্নে বিভোর হয়ে উঠেছে। আমরা এবার ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করে এই আসটির জয় ছিনিয়ে আনবো। সুষ্ঠু ভোট যদি ভোটার দিতে পারে তাহলে সরকারের পতন কেউ ঠেকাতে পারবে না। এছাড়া নেতাকর্মীরা নির্বাচনে প্রচারণা জন্য মনোনয়ন প্রার্থীর জামিন চেয়েছেন। ব্যালটের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার আহবান জানান নেতাকর্মীরা।

রাজনৈতিক পটভূমি: হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী ও রাণীশংকৈল (আংশিক) উপজেলা নিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের নির্বাচনী এলাকা গঠিত। আসনটিতে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৪ জন ভোটার রয়েছে। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত এ আসনটিতে আধিপত্য ধরে রেখেছেন আওয়ামী লীগের এমপি আলহাজ্ব মো. দবিরুল ইসলাম।

কারণ তিনিই একমাত্র প্রার্থী, যিনি কখনো জামায়াত, কখনো জাতীয় পার্টি আবার কখনো বিএনপির হয়ে লড়াই করে পর পর ৬ বার ঠাকুরগাঁও-২ আসনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। মূলত এ কারণেই এমপি দবিরুল ইসলামকে এলাকার লোকজন ভোটের জাদুকর হিসাবে চিনে। দীর্ঘদিন যাবত এমপি থাকার দরুন এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাঁতী লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সব অঙ্গ সংগঠনকে সুসংগঠিত এবং শক্তিশালী হিসাবে এলাকায় গড়ে তুলেছেন। এর আগে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা চালালেও এ আসনে তেমন কিছুই করতে পারেনি। অনেকেই আবার মনে করেন এর একমাত্র কারণ হলো এমপি দবিরুল ইসলামের শক্ত অবস্থান।

ভোটের পরিসংখ্যান: ঠাকুরগাঁও-২ আসনের আওতায় রয়েছে বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলা এবং রানীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড়, কাশিপুরসহ ১৬টি ইউনিয়ন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনকে বাদ দিলে ১৯৮৬ সাল থেকে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন মো. দবিরুল ইসলাম। ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে ১৫ দলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। কখনও জাতীয় পার্টির সঙ্গে, কখনও বা বিএনপি অথবা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী যুদ্ধে বরাবরই জয়ী এই নেতা সর্বশেষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিবারেই তিনি জয়ী হয়েছেন।

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –