• শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪ ||

  • শ্রাবণ ১২ ১৪৩১

  • || ১৯ মুহররম ১৪৪৬

সর্বশেষ:
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ই আইন হিসেবে গণ্য হবে: জনপ্রশাসনমন্ত্রী। ২৫ জুলাই পর্যন্ত এইচএসসির সব পরীক্ষা স্থগিত।

হিয়ার মাঝে লুকিয়ে থাকা রোগ দেখতে আমি পাইনি

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২৩  

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাইনি, তোমায় দেখতে আমি পাইনি। বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাইনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার বিখ্যাত এই গানের মাধ্যমে প্রিয়জনের উপস্থিতি থাকলেও দেখতে না পারার বিষয়টি বুঝিয়েছেন। তার এই গানের ভাষার অনেকটা প্রতিফলন হয়েছে হিয়ার ক্ষেত্রেও। দীর্ঘদিন ধরে হিয়ার মাঝে জটিল রোগ বাসা বাধলেও বাবা-মা জানতে পেরেছে অনেক দেরিতে। ততদিনে চলে গেছে হিয়াকে রক্ষা করার সময়ও।

দিন দিন লিভার বড় হয়ে যাচ্ছে ৩ বছর বয়সী শিশু আদিবা হাসান হিয়ার। ডাক্তারের ভাষায় তার রোগটির নাম গ্লাইকোজেন স্টোরেজ ডিজিস (টাইপ ৬)। রোগটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, ধীরে ধীরে লিভারের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া এবং এর সাইজ বড় করে দেওয়া।

জন্মের দেড় বছর বয়স থেকেই নানাবিধ অসুস্থতায় ভুগছিল হিয়া। ওই সময় দেশের বেশ কিছু চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও শারীরিক কোনো উন্নতি হয়নি তার।
 
পরে চিকিৎসকদের পরামর্শেই হিয়াকে গত নভেম্বরে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের নয়া দিল্লীতে অবস্থিত মেদান্তা হাসপাতালে। হিয়া বর্তমানে ওই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক্স গ্যাস্ট্রোএন্টেরেলোজিস্ট অ্যান্ড হেপাটোলোজিস্ট, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিলাম মোহনের অধীনে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।

হাসপাতালে হিয়ার লিভারের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা ও শারীরিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে ডাক্তার নিলাম মোহন তার পরিবারকে জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব হিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাতে হবে। তিনি ধারণা দিয়েছেন এজন্য সব মিলে প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হবে।

আজমিনা খানম ইলা ও আলী হাসান দম্পতির ২য় সন্তান আদিবা হাসান হিয়া। তাদের ৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। তার আরদি। হিয়ার বাবা একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। মা গৃহিণী। তারা ঢাকার ডেমরা যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশৈংকল উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামে।

হিয়ার বাবা আলী হাসান বলেন, হিয়ার মাঝে যে এতো বড় রোগ বাসা বেধেছে তা আমি কোনো দিনও ভাবতে পারিনি। বুঝতেই পারিনি তার লিভারের সমস্যা রয়েছে। লিভারের চিকিৎসা যে কতোটা ব্যয়বহুল তা আমরা এখন হারে হারে টের পাচ্ছি। এ পর্যন্ত হিয়ার চিকিৎসায় প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি বলেন, ডাক্তার জানিয়েছেন লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য ডোনার, অপারেশন ও অন্যান্য খরচ বাবদ আনুমানিক আরও প্রায় ৪০ লাখ টাকা প্রয়োজন। অথচ এই পরিমাণ টাকা আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষ থেকেও সংগ্রহ করা সম্ভব না। হিয়ার চিকিৎসার পেছনে প্রতিদিন হাসপাতালে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে। কিছু সঞ্চয় ছিল সেগুলো ভেঙে হিয়াকে দিল্লীতে এনেছি চিকিৎসা করাতে। প্রতিদিন যে পরিমাণ টাকা খরচ হচ্ছে আর আমার কাছে যে অবশিষ্ট টাকা আছে তাতে এক সপ্তাহ হয়তো চলতে পারবো এখানে। সেই টাকা শেষ হয়ে গেলে হিয়াকে নিয়ে হয়তো দেশে ফিরে যেতে হবে।

অসহায় এই বাবা বলেন, সমাজের হৃদয়বান মানুষগুলো যদি এগিয়ে আসে তাদের অবদানে হয়তো আমার হিয়া বেঁচে যাবে।

মেয়ের চিকিৎসায় সহযোগিতার আকুতি জানিয়ে মা আজমিনা খানম ইলা বলেন, আমাদের সমাজের অনেকেই তো অনেক জায়গায় গোপনে বা প্রকাশ্যে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। আপনারা চাইলে আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে পারবেন। প্লিজ আপনারা আমার মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।

হিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজখবর জানতে এবং বিকাশে সহযোগিতা পাঠানো যাবে তার বাবার 01774232441 নম্বরে। এছাড়াও 01788900042 নম্বরে নগদের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানো যাবে।

এছাড়াও সহযোগিতা পাঠানো যাবে ব্যাংকের মাধ্যমে। Mst Azmina Khanam, Account No: 1911510084696, Bijoynagar Branch, Routing Number: 090271094, Swift Code: DBBLBDDH, Dutch Bangla Bank Ltd.

– দৈনিক ঠাকুরগাঁও নিউজ ডেস্ক –